দূরের আথিতি

আজ ভীষন বৃষ্টি কালো অন্ধকার করে এসেছে চারিদিক,সঙ্গে এলোপাতাড়ি বৃষ্টি আর হওয়া,প্রায় রোজ ই হচ্ছে এরকম ,অথচ বৈশাখ মাসের কাঠ ফাটা রোদ্দুরে ভীষন গরম থাকে ,,,আর বিকেলের দিকে ঝড় বৃষ্টি।এখন অবশ্য শীত গরম বৃষ্টি সব ই বেড়ে গিয়েছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর জন্য,আবহাওয়ার তুমুল পরিবর্তন ঘটে চলেছে।বেশি বৃষ্টি ,বেশি গরম ,আর বেশি ঠান্ডা সবই বেড়ে গিয়েছে।
আর কি করা যা কাজ তা তো করতেই হবে সিমি কে আবার এক্ষুনি সাত টার সময়ই বেরোতে হবে,ছেলে কে টিউশন থেকে আনতে হবে,,,এসব কাজ তাকেই করতে হয়।
সিমি গল্পের নায়িকা ,,হ্যাঁ নায়িকাই বটে তাকে দেখতে মিষ্ঠি গায়ের রঙ ফর্সা লম্বা গড়ন খুব হাসিখুশি,, একবার কেউ তার সংস্পর্শে এলে কেউ ই খুব একটা তাকে ভোলে না,,এটা সিমি নিজেও জানে বন্ধুরা বলে কিছু কিছু মানুষের মধ্যে এটা রয়েছে এক্সট্রা অট্রাকশন হয়তো সিমি র মধ্যে ও ব্যাপার টি রয়েছে ,যাইহোক সিমি বিবাহিত ঘোর সংসারী স্বামী সন্দীপ গুহ সরকারি চাকুরে আর দুটি সন্তান নিয়ে তার ছোট্ট পৃথিবী।
যেখানে সে সুখী ও পরিপূর্ণ একটি জীবন এ ব্যাস্ত।
তার একটি নিজস্ব দুনিয়া,যেখানে বাইরের লোকের খুব একটা আনাগোনা নেই।
যাই হোক ,, বৃষ্টি টা থামার নাম নেই পরেই চলেছে,সে আর দেরি করতে পারবে না এই ভেবে একটি ছাতা সঙ্গে নিয়ে সে বেরিয়ে পড়ল।
ছেলে কে টিউশন থেকে আনতে যাবে,ঘরে ফিরে তার হোমওয়ার্ক করতে  হবে পরের দিন স্কুল এর জন্য।এগুলো সিমি র ডিউটি, তারপর রোজকার মতো রাতের খাওয়া সব কাজ শেষ হয়ে রেস্ট।
এইসব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে সে বড় রাস্তার পাশে দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিল রাস্তায় জল জমে রয়েছে,বেশ অন্ধকার আর বাইরে লোক জন ও কম।হঠাৎ পাশ থেকে একটি মোটরসাইকেল জোরে এসে সিমির গা ঘেষে দাঁড়িয়ে গেল।সিমি ভয় পেয়ে সরে দাঁড়ালো আর মনে মনে রেগে গেলে,কান্ড জ্ঞান হীন লোকজন রাস্তায় কাউকে ভরসা নেই যা দিনকাল।
এর মধ্যে হঠাৎ সেই ব্যক্তি সিমি কে লক্ষ করে ডেকে উঠলো আরে,,,সমাপ্তি নাহ ?
বলতেই সিমরন একটু কেঁপে উঠলো কে তাকে ডাকছে,চেনাও যাচ্ছে না একে অন্ধকার তার উপর মাথায় হেলমেট । সে হেলমেট টি খুলতেই সমাপ্তি র চিনতে সময় লাগলো না,অমনি বলে উঠলো আরে তুই অনির্বাণ নাহ ? তুই কোথা থেকে এই সময় ? আজ এত বছর পর তোকে দেখলাম চিনতেই পারছি না তারপর কেমন আছিস বল ? আর বিয়ে থা কিরেছিস  কিনা ??
অনির্বাণ হেসে উঠলো আরে দাঁড়া দাঁড়া তুই সেই একই রকম রয়ে গিয়েছিস,, বাচ্চা দের মতো সব তুই বলবি নাহ আমাকেও একটু বলতে দিবি।
এই বলে দুজনেই হা হা হা করে হেসে চলেছে।এবার বৃষ্টি   টাও একটু কমে এসেছে,,,
অনির্বান বললো চল রাস্তায় তোর এত কথার উত্তর দিতে পারব না ,উঠে পর সামনে ক্যাফে তে গিয়ে একটু বসি।সমাপ্তি এই প্রস্তাবের জন্য একে বারেই প্রস্তুত ছিল না,সে ইতস্ততঃ করতে লাগলো ছেলে কে আনতে হবে ,অবশ্য হাতে আধঘন্টা সময় আছে আর এত দিনের পুরোনো বন্ধুর সঙ্গে গল্প করার আশা টাও ছাড়তে পারছে না। তো সে এই সাত পাঁচ ভাবতে লাগলো  আর তখুনি অনির্বান এর ডাকে ওর ঘর কাটলো কি রে উঠে পড় ?
সমাপ্তি উঠার সাথে সাথে অনির্বান হওয়ায় বাইক ছোটাল। সমাপ্তি বাইকে উঠতেই তার কলেজের দিন গুলির কথা সব মনে পড়ে গেলো এক এক করে,,,
সেও কি দিন ছিল অনির্বান বাইক খুব ভালোবাসে
তার র থেকে ও বেশি সেটা সমাপ্তি জানতো, আর মনে মনে হাসত ,,,কি পাগল অনির্বান ছিল এই ভেবে ।
সে সব এখন গল্প বই আর কিছু নয়,
যতই হোক কম দিন তারা একসঙ্গে কাটায় নি ,,
এখন হয়তো সবাই নিজের নিজের জীবনে ব্যাস্ত সুখী বিবাহিত জীবনে ব্যাস্ত।
কিন্তু একদিন এরকম ও ছিল যখন ভেবে ছিল দুজন দুজন কে ছাড়া বাঁচবে না,,,,,,
এই সব কথা আজ খুব মনে পড়ে যাচ্চিল সিমি র
অনির্বান এর ডাকে ঘোর কাটলো সমাপ্তির তারা একটি ক্যাফের সামনে এসে দাঁড়িয়ছে ।
এতক্ষনে বৃষ্টি একেবারেই থেমে গিয়েছে দুজনে বাইক রেখে ভিতরে ঢুকে গেলো দুটো কফির অর্ডার দিয়ে আবার গল্পে ডুবে গেলো।
এতক্ষনে অনির্বান জিগ্যাসা করলো বল সিমি তুই কেমন আছিস ?মনে হয় খুব সুখে রেখেছে তোর বর তোকে আমাকে একে বারে ভুলে গিয়েছিস নাহ ?
সিমি একটি ধমক দিয়ে কি সব বলছিস ছাড় ওসব কথা,,,বল বিয়ে করেছিস সুখে আছিস তো তুই ?অনির্বান  ও বলে চলেছে দিল্লি থেকে এসে এখানেই অফিস জয়ন করেছে সল্টলেকে।ভালো আছে বউ বাচ্চা নিয়ে।
এই সবের মাঝেই চলতে থাকলো পুরানো দিনের স্মৃতি চারনা।
গরম কফি র সঙ্গে সঙ্গে অনেক টুকরো টুকরো ঘটনা র দুজন কে ক্ষনিকের সুখ দিয়ে গেল।অনির্বান বললো তারপর তুই আর আগের মত ছোট্ট সিম্মু নেই,এখন একেবারে পাকা গৃহিনী দুই বাচ্চার মা।
দুজনেই ভীষণ জোরে হেসে ফেলল সেই পুরনো দিনের কথা মনে পরে গেল,,,না জানি কত সময় তারা একসঙ্গে কাটিয়েছে।
সমাপ্তি খুব হাসি খুশি সেটা অনির্বান জানে,,ও ইচ্ছা করেই বেশি করে ওকে হাসির কথা শোনায়, ওর হাসি মুখটি দেখবে বলে।
সমাপ্তিঅনেক দিন পর এত মন খুলে হেসেছিল,,,
না জানি কোথায় হারিয়ে যায় হাসি ,,সংসারের জামেলা অশান্তি তে মানুষ হাসতে ভুলে যায়।
শুধু দায়িত্ব কর্তব্য করতে থাকে।
কফি কাপে চুমুক দিতে দিতে তারা হারিয়ে গেল কলেজ জীবনে,সেই একসঙ্গে কলেজ পালিয়ে ঘুরে বেড়ানো।




Comments

Popular posts from this blog

It's your love.....

UNWANTED LOVE WITH A UNKNOWN PERSON

Amar brishti bheja meye....